প্রযুক্তি ডেস্ক:
চলতি বিশ্বের দারুণ চমক চ্যাটজিপিটি, জনসাধারণের হাতের নাগালে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অভিজ্ঞতা নেয়ার এক চরম সুযোগ। সংক্ষিপ্ত সময়ে সর্বোচ্চ গ্রাহকের কাছে পৌঁছে যাওয়া এই চ্যাটবট আলোড়ন তুলেছে শিক্ষা, চিকিৎসা, প্রকৌশল, রাজনীতি ও সাহিত্যসহ প্রায় সব ক্ষেত্রে। কৌতুহলী মানুষের নানান চমকপ্রদ প্রশ্নের আরো চমকপ্রদ উত্তর দিতে পটু এই চ্যাটজিপিটি। প্রশ্নের সাথে ঠিক করে দেয়া যায় প্রেক্ষাপটও। যেমন আপনি হয়তো ইংরেজিতে প্রশ্ন করলেন, “গায়ে জ্বর হয় কেন?”, এটার উত্তর হবে একরকম, আবার যদি প্রেক্ষাপট ঠিক করে দিয়ে প্রশ্ন করেন, ” চ্যাটজিপিটি তুমি একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, আমাকে ব্যাখ্যা কর, মানুষের শরীরে জ্বর হয় কেন?” তখন উত্তর হবে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের মত। উত্তরের চমক নির্ভর করে প্রশ্নকর্তার প্রশ্ন ও প্রেক্ষাপট তৈরির উপর। চুক্তিপত্র, বক্তৃতা, কবিতা, প্রবন্ধ, গবেষণা সারমর্ম, প্রোগ্রামিং, গাণিতিক হিসাব, পরামর্শ, প্রতিবেদনসহ চমৎকার সব বিষয়েই অনায়াসে লিখে সমাধান দিচ্ছে এই প্রযুক্তি। চিন্তার বিষয় হল, চ্যাটজিপিটির এই উত্তর গুলো দেয় কিভাবে, দিলেও কতটুকু গ্রহণযোগ্য? মূলত নেট দুনিয়ায় প্রাপ্ত বিশাল পরিমাণ মানবসৃষ্ট তথ্য দিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে প্রশিক্ষন দেয়া হয়েছে, মানুষের প্রশ্ন ও উত্তরের ধরন বিশ্লেষণ করে, ইন্টারনেটে প্রাপ্ত তথ্যভান্ডার ব্যবহার করে বিশ্বাসযোগ্য উত্তর দেয়ার চেষ্টা করে এটি। এর উত্তরের ত্রুটিপূর্ণতা অসম্ভব কিছু নয়, যাচাই বাছাইয়ের দরকার আছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এটি ব্যবহার করে নকল করার অভিযোগও উঠেছে এর মধ্যে। অনেক সময় অসত্য ও ক্ষতিকর তথ্য দেয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেনা এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেন এআই। সৃজনশীল অনেক কাজেই মানুষের সাথে প্রতিযোগিতায় নামবে এই চ্যাটজিপিটি, চাকরির ক্ষেত্রও অনেক সংকুচিত করবে ধারণা বিশেষজ্ঞদের। তবে নতুন নতুন সম্ভাবনার দুয়ারও খুলে যাবে এর সাথে সাথে। চলমান বিশ্বের এই প্রযুক্তি দৌড়ে এখনই জানাশোনা গড়ে না তুললে পিছিয়ে যেতে হবে নিঃসন্দেহে। আমাদের শিক্ষার্থীদের এর ভালো, খারাপ দিকগুলো ও সীমাবদ্ধতাগুলো জানতে হবে। সকল শ্রেণীপেশার মানুষের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কাছে নেয়ার অনেক কিছুই আছে।
লেখক :মোঃ জোনাইদুল ইসলাম
প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার, মেরিডিয়ান কোহিনূর সিটি, চট্টগ্রাম।