1. admin@nagoriknewsbd.com : admin :
  2. admin@hasibitsolution.com : Hasib :
  3. info.popularhostbd@gmail.com : PopularHostBD :
  4. user@nagoriknewsbd.com : user :
রবিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:৪৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে যা যা দরকার সবই করা হবে: নির্বাচন কমিশনার চট্টগ্রাম বোর্ডে এইচ এস সি পরীক্ষায় পাশের হার ৭৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ বিআরটিসির কেনা ৫০০ ট্রাক ৩ বছরে অকেজো! খুলনাঞ্চলের প্রধানসহ নিষিদ্ধ সংগঠনের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার নৌকার টিকেট পেলেন যারা চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা বি-ব্লক বালির মাঠ প্রাঙ্গনে জার্সি বিতরণ চট্টগ্রামের  ৪টি আসনে জাতীয়  পার্টির   মনোয়ন চান – সোলায়মান আলম শেঠ সর্ববিচারের  যোগ্যতায় আমার  বিশ্বাস মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মূল্যয়ন করবেন-ড.নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু চট্টগ্রামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করলেন :প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কখন আসা যাওয়া হবে ও কত ট্রেন ভাড়া হবে ঢাকা কক্সবাজার রোড়ে

ওয়েস্ট ইন্ডিজবিহীন বিশ্বকাপ, গৌরবের যবনিকাপতন

মাজেদ আলি
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ৪ অক্টোবর, ২০২৩
  • ৩৮ বার পড়া হয়েছে

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে এবার দেখা যাবে না বিশ্বকাপে

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটে কি আর সুদিন ফিরবে। পরিস্থিতি তো প্রতিকূলে

লিও তলস্তয় যে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পাননি, এটিকে অনেকেই ধরেন নোবেল পুরস্কারের ব্যর্থতা হিসেবে। সাধু দর্শনের এই রুশ সাহিত্যিক এতটাই বড় মাপের ছিলেন যে দুনিয়ার অন্যতম সেরা পুরস্কারের চেয়ে তাঁকে বড় ধরা হয়।

গ্যারি সোবার্সের ক্রিকেট বিশ্বকাপে না খেলার ব্যাপারটিকেও কি এর সঙ্গে তুলনা করা যায় না? ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা অলরাউন্ডার বললে প্রায় তর্ক ছাড়াই স্যার গ্যারির নাম আসবে। অথচ প্রথম বিশ্বকাপের আগে আগে ইনজুরির কারণে দল থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন ক্যারিয়ার–সায়াহ্নে থাকা সোবার্স।

শুধু তা–ই নয়, গ্যারি সোবার্স ওয়ানডেই খেলেন মাত্র একটি। ৬ বল খেলে শূন্য রানে আউট আর বোলিংয়ে তিন উইকেট পেলেও শ্বাসরুদ্ধকর শেষ ওভারে তাঁর বলেই লো স্কোরিং ম্যাচে জয় তুলে নেয় ইংল্যান্ডের শেষ জুটি।

সোবার্স ওয়ানডে বিশ্বকাপ না খেললেও ওয়ানডেতে রং ছড়ানো এবং এটিকে জনপ্রিয় করার দায়িত্বটা পালন করেছেন তাঁর সতীর্থরাই। ক্যালিপসো ছন্দে ক্রিকেট–দুনিয়াকে মোহিত করে রাখা ওয়েস্ট ইন্ডিজ সত্তর আর আশির দশকে কেবল সেরা দলই ছিল না, দাপটের সঙ্গে জিতে নেয় প্রথম দুটি বিশ্বকাপ।

সেই দুবারই আবার অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন। এর মধ্যে ১৯৭৫ সালে প্রথম বিশ্বকাপে অপরাজেয় যাত্রাটা মসৃণ ছিল না। পাকিস্তানের সঙ্গে প্রায় হেরে যাওয়া ম্যাচটিতে শেষ উইকেট জুটির ৬৪ আর শেষ ২ উইকেটে ১০১ রান প্রমাণ করেছিল, দলটা কেবল শক্তি আর ক্ষমতা দিয়েই খেলে না, বিপদে পড়ে দাঁত চেপে লড়াই করতেও জানে।

ফাইনালে ডেনিস লিলির বলে হুক করে ছয় মেরেও স্টাম্পের ওপর পড়ে হিট উইকেট হওয়া রয় ফ্রেডেরিকসের ছবিটা টুর্নামেন্টের আদর্শ ‘পোস্টার’ হয়ে ওঠে। আর বিগ ক্যাট লয়েডের দুর্দান্ত ১০২, আর ফিল্ডিংয়ে চার–চারটা রানআউটের মাধ্যমে ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে সেরা দলটা কাপ উঁচিয়ে ধরে।

বিশ্বকাপের সঙ্গে, টুর্নামেন্টটার বিবর্তনের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে যায় দলটা। চার বছর পর আবার জেতে বিশ্বকাপ। প্রায় একই রকম অপ্রতিরোধ্যভাবে।

তবে সেই দুই বিশ্বকাপের মাঝখানে ঘটে যায় ক্রিকেট–দুনিয়া কাঁপানো এক ঘটনা। অস্ট্রেলীয় ব্যবসায়ী ক্যারি প্যাকার্স আয়োজন করেন ওয়ার্ল্ড সিরিজ। রঙিন পোশাক, ফ্লাডলাইট, সাদা বল, দিবারাত্রির কাব্য। আর এই আয়োজনের মূল আকর্ষণ ছিলেন ক্যারিবীয় খেলোয়াড়েরা। পরের বিশ্বকাপের আগেই এই আয়োজন শেষ করে ক্যারিবীয়রা আবার বিশ্বকাপ অক্ষুণ্ন রাখার মিশনে নামে, তবে ওয়ার্ল্ড সিরিজ ক্রিকেটের ধারণা পাল্টে দেয়।

এ রকম সর্বজয়ী দলটাকেই কিনা পেয়ে বসল অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসে। তখনো পর্যন্ত ওয়ানডে ক্রিকেটে তেমন সাফল্য না পাওয়া ভারতের কাছে হেরে বসল ১৯৮৩ বিশ্বকাপের ফাইনালটা। হ্যাটট্রিক শিরোপা হলো না। মাত্র ১৮৩ রান তাড়া করতে ব্যর্থ হওয়া শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপটা যেন খেলাধুলার দুনিয়ার চরম শিক্ষা দেওয়ার দায়িত্বটা নিল! যত ভালোই হও না কেন, প্রতিপক্ষকে অবহেলা কোরো না।

সেই অভিশাপেই কিনা দলটা এরপর আর ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিততে পারল না!

কিন্তু ১৯৮৩ বিশ্বকাপের ফাইনাল হেরে ক্রিকেট–বিশ্বের ইতিহাসটাই যে পরিবর্তন করে দিয়েছিল উইন্ডিজ! তার প্রভাব যেন তাদের সর্বজয়ী দশকের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়।

বিশ্বকাপ জিতে, বিপুল জনগোষ্ঠীর তৃতীয় বিশ্বের দেশ ভারত নতুন এক আত্মবিশ্বাস পেল। দীর্ঘদিন ঔপনিবেশিকতার চাপে পিষ্ট দেশটার জন্য সবচেয়ে বড় জাতীয়তাবাদী টনিক হয়ে এল।

সেই টনিকের জোরে একসময় ক্রিকেট–বিশ্বের নিয়ন্ত্রণটাই নিয়ে নিল একসময়ের ঔপনিবেশিক প্রভুদের কাছ থেকে।

এর প্রভাবটা বোঝা গেল পরের টুর্নামেন্টেই। প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডের বাইরে বিশ্বকাপ আয়োজন করা হলো। আয়োজক ভারত আর পাকিস্তান। ভারত বিশ্বকাপ না জিতলে সেটি সম্ভব ছিল না বলে মনে হয় না।

সেই বিশ্বকাপে প্রায় ক্ষয়ে যেতে থাকা উইন্ডিজ দেখাল স্পিরিট অব দ্য ক্রিকেট। মানকাডিং করে আউট করার সুযোগ থাকলেও তা না করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জেতা ম্যাচ হেরে গেল কোর্টনি ওয়ালশের ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

পরের আসরগুলোর গল্পে ওয়েস্ট ইন্ডিজ মূল চরিত্র থেকে ধীরে ধীরে একেবারেই গুরুত্বহীন হলো। লারা, অ্যামব্রোসদের প্রতাপেও ১৯৯২ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠতে পারল না। আর ১৯৯৬ সালে পরের বিশ্বকাপে করল বড় একটা ‘পাপ’।

অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে মিশে বয়কট করল শ্রীলঙ্কা। খেলোয়াড়ি চেতনার চেয়ে রাজনীতিকে বড় করে দেখল। এখনকার দিনে ব্যাপারটা ভাবা অসম্ভব হলেও এই ঘটনা দক্ষিণ এশিয়ার ক্রিকেটকে আরও এককাট্টা করল।

টুর্নামেন্টের মাঝখানেই ভারত আর পাকিস্তানের যৌথ একটা দল শ্রীলঙ্কা সফর করল। বলা হলো, দুটো ম্যাচ আয়োজন করতে না পারা শ্রীলঙ্কার ক্ষতি পোষানো, আসলে তা ছিল বিরাট রাজনৈতিক বার্তা। দক্ষিণ এশিয়া এককাট্টা হয়ে ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রণ নিতে প্রতিজ্ঞ।

বলাই বাহুল্য, বছর চারেক বাদে বাংলাদেশের টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পেছনে সেই এককাট্টা ভূমিকাই ছিল প্রধান।

‘পাপের শাস্তি’ নগদে পেল ক্যারিবীয়রা। সেমিফাইনালে প্রায় নিশ্চিত জেতা ম্যাচটা হেরে গেল সেই অস্ট্রেলিয়ার কাছেই। এরপর আর কখনো সেই পর্যায়ে যেতেই পারেনি দলটা। আর কখনো পারবে বলেও মনে হয় না।

তত দিনে উপনিবেশবিরোধী উত্তাল চেতনা মিইয়ে গেছে। ক্যারিবীয় তরুণেরা ক্রিকেটের চেয়ে বেসবল, বাস্কেটবল আর অ্যাথলেটিকসকে বেশি আকর্ষণীয় ভাবছে অর্থ আর খ্যাতির আকাঙ্ক্ষায়।

মজার ব্যাপার হলো, ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিন্তু ক্রিকেটে উপেক্ষণীয় রইল না। নতুন শতকে আগমন ঘটল টি–টোয়েন্টির। পায়জামা ক্রিকেট ওয়ানডের চেয়ে সংক্ষিপ্ততর। আরও উত্তেজনার।

দল হিসেবে উদ্যম হারানো উইন্ডিজ তরুণেরা এই খেলাটায় ভালো করতে লাগল নিজেদের আমুদে প্রকৃতি আর মুক্ত জীবনের দর্শনকে কাজে লাগিয়ে। ফুটবলের মতো ক্রিকেটেও ভবিষ্যৎটা হয়তো ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটই হবে। সেখানে আকর্ষণ হয়ে থাকবেন ক্যারিবীয় খেলোয়াড়েরাই।

বিশ্বায়নের শুরুতে টেস্টের যখন জয়জয়কার, তখন গ্যারি সোবার্সরা ক্রিকেটটাকে জনপ্রিয় করেছিলেন। লয়েড, রিচার্ডসরা ওয়ানডে ক্রিকেটকে অন্য মাত্রায় তুলে নেন। ক্রিস গেইলরা টি–টোয়েন্টি আর ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট। ক্রিকেট বিবর্তনের গল্পের কেন্দ্রেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

কথা হচ্ছিল বিশ্বকাপ নিয়ে। পতনের চূড়ান্ত সীমায় গিয়ে এবার বিশ্বকাপেই কোয়ালিফাই করতে ব্যর্থ ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এমন এক সময়ে, যখন সবাই ভাবছে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের বাণিজ্যিক রমরমা ভাব আর টেস্ট ক্রিকেটের আভিজাত্য হয়তো খেলাটা বাঁচিয়ে রাখবে কিন্তু ওয়ানডের ভবিষ্যৎ প্রবল ঝুঁকিতে। ক্রিকেটপাগল ভারতে বিশ্বকাপ আয়োজন করেও এই টুর্নামেন্ট রমরমা ভাবটা কদ্দুর ধরে রাখতে পারবে, তা নিয়ে সংশয়।

ক্রিকেটের চূড়ান্ত আমুদে, ফ্যাশনেবল, বিবর্তন এনে দেওয়া দলটার অনুপস্থিতি অগোচরে কি সেই বার্তাই দিচ্ছে?

ওয়েস্ট ইন্ডিজ বহু বছর ধরেই বিশ্বকাপে তেমন কোনো দল না, কিন্তু এই বার্তাটাই ওয়ানডে আর ইতিহাসপ্রেমীদের মনে চোরাকাঁটার মতো বিঁধবে, সন্দেহ নেই।

 

সংবাদ টি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved
Design BY POPULAR HOST BD